ভালবাসা কি

আমি আগে ভালবাসা কি তা বুঝতাম না।।বহু ছেলেদের Feelings নিয়ে খেলেছি ।
যদি জানতাম যে ১টা নিষ্ঠুর পরিনতি আমার জন্য অপেক্ষা করছে, তাহলে আমি তা কখনই করতাম না।।
আমাদের বর্তমান যুগ হছে Digital যুগ ।। তাই আমরাও digital.. অল্প বয়সে প্রেম করি।।

আমি তখন বোর্ড পরীক্ষা দিব।। তাই preparation ভাল করার জন্য ১টা কোচিং সেন্টার এ
ভর্তি হলাম।। আগে ঢাকায় থাকতাম, কিন্তু আব্বুর চাকরির সুবাদে চলে আসলাম ১টা ছোট শহরে।।
কিন্তু পোশাক-আশাক এ ঢাকার ছাপ টা রয়েই গেলো। কোচিং এর ১ম দিন... এক ছেলে দেখে দেখে লিখছিল।

আমি স্যার কে বললাম যে ছেলে টি দেখে দেখে লিখছে।। স্যার ছেলেটা কে ক্লাস থেকে বের করে দিলেন।।
যে ছেলে টা কে বের করলেন , তার ১ বন্ধু ক্লাস শেষে অন্য ছেলেদের বলছিল... " এই দেখ... এই নতুন
বোম ১ম দিন আইশাই তার পাওয়ার দেখায়া দিসে" ।
কথা টা আমার খুব লেগেছিল।। তাই ছেলে্টা কে বললাম...
"আমার ১টা নাম আছে।। আর আমার বেপারে কথা বলার আগে ১০০ বার ভাববে... তারপর কথা বলবে...
আমি অন্য মেয়েদের মত নই যে তোমার ফালতু কথা চুপ করে শুনব"
আমি চলে আসার পর অই ছেলেটার friends-group এর সবাই হাসতে শুরু করলো... কারন কথাগুলো আমি
সম্পূর্ণ শুদ্ধ ভাষায় বলেছিলাম... ক্লাস শেষে আমি বাসায় চলে আসি...
পরদিন আবার কোচিং এ যখন গেলাম... তখন দেখি ওই ছেলে আর তাদের বন্ধুরা আমার দিকে তাকিয়ে
কি যেন বলছে... আমি পাত্তা না দিয়ে আমার frds এর সাথে কথা বলতে থাকি।। তখন আমার ১ ছেলে বন্ধু
তাকে আমাকে আমার facebook id দিতে বলে।। আমি দিলাম ও ফাইজলামি করে বললাম যে আমার id
দিয়ে তুই কি করবি? ও বলল যে প্রতীক চাইসে...( যে আমাকে বোম বলেছিল তার নাম প্রতীক) ... ক্লাস এ বসেই প্রতীক তার ফোন দিয়ে সার্চ দিল কিন্তু আমার id টা পেল না... পরে আমি প্রতীক এর সাথে গিয়ে বসে আমার id টা বের করে দেই...
তারপর বাসায় এসে কেন জানি আমি প্রতীক কে msg পাঠালাম ... তার পর আমাদের কথা বলা
শুরু হল...
প্রতিদিন শুধু " কেমন আছো?।। ভাল আছি" এই পর্যন্ত কথা হত... আর কোচিং এ শুধু ১টি
হাসি বিনিময় হত... এভাবেই ১দিন পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলো... প্রায় ১ মাস কোন কথা হল না...
রেজাল্ট এর দিন দেখা হল।। পরিক্ষার ফল আমার আর তার ভালই হল... এর পর আমাদের নিয়মিত
কথা হত ও আমরা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম... সব কথাই শেয়ার করতাম... আমার বার্থডের দিন সে
হঠ্যাৎ আমাকে offer দিল।। আমি তাকে না করে দেই।। তখন থেকে অনেক দিন আমাদের কোন কথা হয় নি।।

পরে নতুন করে আবার আমি ১টা কোচিং এ ভর্তি হই এবং প্রতীক ও ভর্তি হয়... আমি প্রতীক এর সাথে কোন
কথা বলতাম না... পরে সে আমার কাছে মাফ চায় এবং আমাকে কথা দেয় যে সে আর এমন করবে না...
আমি তাকে মাফ করে দেই এবং আমাদের বন্ধুত্ত আর ও ভালো হতে থাকে... এভাবে ২ মাস চলার পর
প্রতীক প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে আমাকে offer দিতে থাকে এবং আমি তাকে না করে যেতে থাকি...
সে প্রতিদিন আমার জন্য গোলাপ আনত কিন্তু আমি নিতাম না। সবার সামনে মাটিতে বসে গোলাপ ফুল
দিয়ে সে আমাকে offer দিতো।। আমি খুব লজ্জা পেতাম... প্রতীক বেপার টি বুঝেও না বুঝার ভান করত।।
১দিন সে আমার হাত ধরে তার খুব কাছে টেনে নিয়ে বলল যে সে আমাকে ভালবাসে... আমি আর কোন কথা
বললাম না।। সারা ক্লাস মাথা নিচু করে বসে ছিলাম...
পর দিন ... সে আমার জন্য গোলাপ আনে নি।। ছুটির পর হথাথ করে সে পিছন থেকে আমাকে টান দেয়
এবং খুব জোরে জড়িয়ে ধরে... আমাদের মাঝে ১ বিন্দুও জায়গা ছিল না... আমার গা ... তার গা এর সাথে
একদম এঁটে ছিল... প্রতীকের শরীরের সুবাস আমি অনুভব করতে পারছিলাম।। প্রায় ২ মিনিট এভাবে থাকার
পর আমি দৌড়ে ওইখান থেকে চলে আসি.. সারা রাত আমি কথাটা ভাবি... মাথা ১দম কাজ করছিল না...
পরদিন আমি কোচিং এ যেতে রাজি না হলেও আম্মু আমাকে জোড় করে পাঠালেন ... দেখলাম প্রতীক গোলাপ নিয়ে ক্লাস এ দাড়িয়ে আছে... আমি কেনও জানি গোলাপ টা নিলাম... আর প্রতীক এর হাসির শব্দ অনুবব করতে থাকলাম।।
শুরু হল আমাদের ভালবাসা।। ক্লাস এর সময় আমি আর সে ১ সাথে বসতাম।। ক্লাস এর ফ্রি টাইম এ আমি তার কাধে মাথা রাখতাম... সব ঠিক ই ছিল... আমাদের romance দিন-দিন বেরেই চলছিল।। বেশি আকাশে উড়ছিলাম।।
তাই মাটিতে নামানোর কাজ টা করলো আমার বেষ্ট-ফ্রেন্ড মীম আর তার বয়-ফ্রেন্ড ।। তারা আমার আর প্রতীক এর
১ সাথে তোলা কিছু ছবি আমার ১ জন স্যার ( যিনি আমার আত্মীয় ) তাকে দেখান। স্যার সে ছবি গুল আমার
আম্মু কে দেখান এবং আমার কোচিং এ যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়... কিন্তু আমি হার মানি নি...
বাসায় যে দিন জানা-জানি হল।। ওই দিন আমি ফোন নিলাম ও প্রতীক কে ১ম বারের মত বললাম যে
"babe i love u so much.. don't worry.. i will be always with you"

পরে সারা রাত আমরা ফোন এ কথা বলতাম... অনেক কাছে চলে এসেছিলাম পরস্পরের!! প্রায়ই
দেখা করতাম ।। আমি একটু রাগী ।। একদিন রাগের মাথায় আমি প্রতীক কে তার বন্ধু দের সামনে চড় দেই...
তবুও সে আমাকে ছারেনি !! আমার জন্য প্রায়ই সে রাস্তায় অপেক্ষা করত।। কিন্তু আমাদের ভালবাসা টাকে যে নজর
লাগেছিল মীম এর!! সে অনেক চেষ্টা করছিল আমাদের সম্পর্ক ভাঙার জন্য।। অবশেষে সে সফল ও হয়েছে।।

সম্পর্ক থাকা অবস্থায় আমরা সাময়িক পরীক্ষা দিলাম।। সারা রাত কথা বলার জন্য আমরা কেও ই ভালো
করে পড়তে পারি নি।। তবুও আমার ফলাফল ভালো হল।। কিন্তু প্রতীক এর খুব খারাপ হল।। কিন্তু আমি টা জানতাম না !!
আমার ফলাফল ভালো হওয়ায় আমি ফেসবুক এ ১টা status দেই।। status টা পড়ে প্রতীক এর বন্ধুরা তাকে
লজ্জা দিতে থাকল যে তার প্রেমিকা তার থেকে বেশি নাম্বার পায়।। প্রতীক নাকি আমার যোগ্য না।। ইত্যাদি ইত্যাদি
তার পর যা হল তা আমি কখনই ভাবি নাই।। আমার বান্ধুবি মীম প্রতীক কে ফোন করে বলে যে আমি নাকি ইছা করে
ফেসবুক এ status দিসি তাকে লজ্জা দেয়ার জন্য ও আমি নাকি অন্য ১ ছেলে কে ভালবাসি এবং তাকে নাকি ধোঁকা দিছি।। প্রতীক ওর কথায় বিশ্বাস করে ।।
মীম এবং প্রতীক আমাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ১টা plan করলো।।
মীম প্রতীক কে বলল আমাকে ছেঁকা দেয়ার জন্য।। প্রতীক তাই করলো।। আমাকে একা রেখে এখন সে কার সাথে
প্রেম করে জান বন্ধুরা?? ওই যে আমার বান্ধুবি মীম এর সাথে।। শুনলাম সম্পর্ক বিছানা পর্যন্ত গড়িয়েছে।।

আজ ও আমি নিজের মাঝে তাকে খুঁজে পাই।। যে আমার জন্য পাগলের মত কাজ করত... আমি আখন শাই পাগলামি গুল করি।। যাকে ভালবেসে ছিলাম সে ছেঁকা দিল।। আর যাকে বন্ধু ভাবতাম... সে শত্রু থেকেও বড় ক্ষতি করলো।।
  • Facebook Comment