Romance এর শুরু এখানেই

বর্ষায় ভরা নদী যখন তখন বৃষ্টি হয়,
আবার রোদ কখন বৃষ্টি হবে আর কখন
যে রোদ উঠবে তা বোঝার উপায় নেই
আর বৃষ্টির দিনে একটি ছাতা
পলিথিন ব্যাগ আমার সাথে থাকে
যেন বৃষ্টি আসলে পলিথিনে সব বই,
জামা কাপড়
রেখে বৃষ্টিতে ভেজা যায়
কয়েক মাস হল কলেজে ভর্তি হয়েছি
গাঁয়ের শেষে যে নদী, তা পার হয়ে,
নদীর তীর ঘেঁষা রাস- দিয়ে প্রায়
পৌনে এক মাইল হেটে আমাকে রোজ
কলেজে যেতে হয় ফেরার
পথে বৃষ্টি আসলে ছাতা থাকা স্বত্বেও
ভিজতে ভিজতেই বাড়িতে ফিরি
আজ কলেজে যেতে একটু দেরি হল
যাওয়ার সময়
মধ্যি পথে নামলো বৃষ্টি দ্রুত কোন
দিকে ছুটব বুঝে উঠতে পাড়ছিনা
অতঃপর রাস-ার পাশে বাঁশঝাড়ের
ঝোপে যেখানটায়
বৃষ্টি না পড়ে সেখানে আশ্রয় নিলাম
দেখি আমার মত আরও একজন দাড়িয়ে
একই কলেজে পড়ি তবে সে মানবিক
শাখার দুজন দুজনাকে চিনি কিন
কথা হয়নি কখনও
ছাতা নিয়ে আসেনি তাই আমার
ছাতাটা ফুটিয়ে দুজন
পাশাপাশি দাড়ালাম
কাছাকাছি কোন বাড়ি নেই
যে সেখানে যাব বৃষ্টির
ঝাপটা ক্রমেই বাড়তে থাকলো
আমরা যেখানে দাড়িয়ে, ঠিক তার
সামনেই নদী নৌকায় করে লোকজন
কাঁচা পাট বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে
মাঝি মল্লারা কেউ কেউ আমাদের
দিকে তাকিয়ে হাঁসছে কেউ তাকিয়েই
আছে আবার কেউবা একবার তাকিয়েই
নৌকার দাঁরে জোরে জোরে টান
মারছে; হেইয়া কারো আবার গানের
গতি মন হয়ে যাচ্ছে
ছাতা একটি তাই
দুজনকে রক্ষা করতে গিয়ে দুজনই
ভিজে একাকার লজ্জায় কেউ
কারো দিকে তাঁকাতে পারছিলাম না
ভেজা শরীর
নিয়ে ছাতা হাতে দাড়িয়ে থাকতে
অস্বসিবোধ করলাম তাই
ছাতাটা ঝোপের মধ্যে ফেলে দিলাম
তার মুখে নির্লজ্জের হাসি আমার
চোখ ছানাবড়া হয়ে উঠলো তার
হাসি দেখে দুজনের চোখে চোখ
পড়তেই আবার হাসি বন্ধ তবে কেন
জানি হাসি হাসি মুখ করে নিচের
দিকে তাকিয়ে
অনেকক্ষণ চুপ অতঃপর আবার
জোরে জোরে হাসি এই হাসির কোন
কারণ খুঁজে পাইনা জানি কেউ
পারবেনা এই হাসির রহস্য উৎঘাটন
করতে নদীর মাঝখান দিয়ে বড়
একটি হাঁসের দল শাতার
কাটতে কাটতে স্রোতে ভেসে যাচ্ছে
ওরা বৃষ্টির মধ্যে কোত্থেকে এসেছে,
নীড়ে ফিরতে পারবে কিনা জানিনা
একটা ডাহুক পাখি তার
তিনটি বাচ্চা নিয়ে নদী থেকে উঠে
এসে বাঁশঝাড়ের কোথায় যেন
লুকিয়ে থাকলো ছোট ব্যাঙের
বাচ্চাগুলো নাচতে নাচতে পায়ের
কাছে চলে আসছে
বাড়ীতে চলে যাওয়ার জন্য মন সি
করলাম সামনের দিকে পা বাড়াতেই
পেছন ফিরে দেখি মাথা নিচু
করে মন খারাপের মত দাড়িয়ে আছে
যাওয়ার সময় ওর
অভিমানী মুখটি দেখে যাব, এই
ভেবে আমিও ওর দিকে তাঁকিয়ে আছি
কিছুক্ষণ পর আমার দিকে চোখ
রেখে ওর হাতটি বাড়িয়ে দিল তার
মায়াবী মুখটি দেখে আমি আর সংযত
থাকতে পারলাম না বাড়িয়ে দিলাম
হাত
খুব সংকিত মনে হাতটি ধরলাম
বৃষ্টির মধ্যেও হাতটাতে বেশ
উত্তাপ অনুভব করলাম কথা বলার
ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছি নিস-ব্ধ
আমরা সামনের
দিকে ভিজতে ভিজতে পথ এগুচ্ছি
কিছুদুর এগুতেই দেখি কারা যেন জাল
নিয়ে মাছ ধরতে ছুটছে তাই হাত
ছেড়ে দিয়ে আগ পিছ হয়ে হাটছি
এবার দুজনার পথ দুদিক তাই আবার
নিরবতায় দাঁড়িয়ে আছি কিনকেউ
আসছে ভেবে দুজনার দুদিকের পথ
ধরতে হলো কিছুদুর গিয়ে দেখি
আমার দিকে তাকাচ্ছে দুর থেকে হাত
নেড়ে বিদায় জানালাম
পরের দিন প্রচন্ড রোদ
দুরে সাদা মেঘ দেখা যাচ্ছে ছোট
বালকের দল
পানিতে পানকৌড়ি খেলছে
আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকা পার
হয়ে কলেজের রাস- ধরতেই দেখি
বাঁশঝারের নিচে ছায়ায় দাড়িয়ে
সবাই চলে যায়
আমি দাড়িয়ে থাকি সামনে
অন্যান্যরা পেছনে তাঁকাতে তাঁকাতে কি
যেন
কি
বলতে বলতে হাসতে হাসতে চলে
যাচ্ছে
নিরব নিস-ব্ধ, যেন নিরবতার
ভাষা চলছে এখানে
কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিনা এমন
সময় বলল, ছাতাটা কি ওখানেই
(
ঝোপের মধ্যে) থাকবে? ওর
কথা শুনে সভ্য বালকের মত
ছাতাটা তুললাম উহুম; এক ঝাক
মশা বংশ বিস-ার করছে তার মধ্যে
মশার শব্দে মনে হল মৌচাক
ভেঙ্গেছি আমি বাধ্য
হয়ে ছাতাটা পানিতে পরিস্কার
করতে হল রোদের
মধ্যে ছাতাটা এবার কাজে দেবে
ঠায় দাড়িয়ে দেখছে আর
মিটিমিটি হাসছে
একই ছাতার নিচে হাটতে থাকলাম
দুজন বা হাতে ছাতা, ডান হাতে বই
আমার ডান পাশটাতে নদী
পালতোলা নৌকায় মাঝি গান ধরছে;
আমায় ভাসাইলিরে আমায়
ডুবাইলিরে…………….. বললাম আজও
ছাতা ফেলে দিয়ে হাত ধরে হাটি?
না, শব্দ বলে আমার বা হাতটা শক্ত
করে ধরলো বইগুলো বাহুতে চাপ
দিয়ে ছাতাটা ডান হাতে ধরলাম শুরু
হল কথা বলা, পথ চলা ………………….
(সংগৃহীত)
  • Facebook Comment