" বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভেজার সময় তুমি মনে মনে যা চাইবে তাই পাবে । "
-"তাই বুঝি ।"
সেদিন ওনার কথা শুনে খুব হাসি পেয়েছিল ।হাসতে হাসতে বলেছিলাম, আপনি কখনো কিছু চেয়েছেন ?
উনি একটু রাগ হয়েই বলেছিলেন, " বিশ্বাস করছো না কেন তুমি ? এটা সত্যি ।"
থাক,সত্য অসত্যের প্রমাণটা পরে করি । আগে আমার আর ওনার পরিচয়টা দেই ।
-"তাই বুঝি ।"
সেদিন ওনার কথা শুনে খুব হাসি পেয়েছিল ।হাসতে হাসতে বলেছিলাম, আপনি কখনো কিছু চেয়েছেন ?
উনি একটু রাগ হয়েই বলেছিলেন, " বিশ্বাস করছো না কেন তুমি ? এটা সত্যি ।"
থাক,সত্য অসত্যের প্রমাণটা পরে করি । আগে আমার আর ওনার পরিচয়টা দেই ।
আমি নীল । নাহ, ভুল বললাম । আমি চাইনা আর কেউ কোনদিন আমায় নীল বলে ডাকুক । আমায় নীল বলে ডাকার অধিকার শুধু একজনের ।সেই
যখন
আর
কখনো
নীল
ডাকবে
না
তখন
....
এইতো আমি আবার শুরু করেছি । জানেন তো, আজকাল এমনটি আমার প্রায়ই হয় । আসল কথা ছেড়ে বাড়তি কথাই বেশি বলি ।
যাক সে কথা । আসল কথায় আসি । আমার নাম নীলিমা । আপাতত, আমায় এ নামে চিনলেই চলবে ।আর ওনার নাম অনিমেষ । আমার অনিমেষ দাদা।দাদার সাথে আমার পরিচয়টা হয়েছিল আজ থেকে ৫ মাস আগে ।একটা অনুষ্ঠানে । পুরো অনুষ্ঠানের পরিচালনায় ছিলেন উনি।সেদিন তার উপস্থাপনা দেখে এত ভালো লেগেছিলো ...।এত মানুষের ভিড়ে একজন মানুষ, যাকে সত্যিই সবার থেকে আলাদা করা যায়।ওনার নামটা তখনো জানতাম না ।খুব জানার চেষ্টা করছিলাম । তার সম্পর্কে আমার কৌতূহল দেখে আমার বন্ধুরা
বলল, কিরে LOVE AT FIRST SIGHT? ওদের কথা শুনে হেসে দিলাম । "আসলে ওসব কিছু না । Just কৌতূহল ।""
সেদিনই ওনার পরিচয় পেয়েছিলাম । পরিচয় বলতে শুধু নামটা । সেটাও একটু অন্যভাবে ।পুরো অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবার পর যখন বের হয়ে আসছিলাম তখন হঠাত্ দেখলাম সে বাইরে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে ।ঠিক এইসময়েই কেউ একজন তাকে অনিমেষ দা বলে ডাক দিল আর আমিও জেনে নিলাম তার নাম ।
"উনি তো হিন্দু " - তমা বলল ।
তাইতো মনে হচ্ছে ।
কেমন যেন একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম সেদিন । ওনার ধর্ম আর আমার ধর্ম আলাদা ! বিশ্বাস হচ্ছিল না ।আমার বন্ধুরা তারপর থেকে প্রায়ই ওনাকে নিয়ে আমার সাথে ফাজলামো করত ।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম আমরা । তাই রাস্তাঘাটে প্রায়ই দেখা হত ওনার সাথে ।ওনার কথাবার্তা, চলাফেরা , ওনার সবকিছুই ভালো লাগতো আমার ।সবচেয়ে ভাল লাগতো ওনার creativity টা । কলেজের সব অনুষ্ঠানে তার সক্রিয় উপস্থিতি দেখে আমি মুগ্ধ হতাম । আমিও একসময় মনে করতে আরম্ভ করলাম যে, really i am in love. কিন্তু আমি জানতাম যে এটা অসম্ভব । তাই এই ভাবনাটাকে কখনো প্রাধান্য দেইনি ।
তার সাথে অনেকবার এভাবে দেখা হলেও তার নামটা ছাড়া আর তেমন কিছু জানতে পারি নি
হয়তো সেভাবে কখনো জানার চেষ্টাও করিনি ।
তার সাথে আমার
দ্বিতীয়বারের মত পরিচয় হয় ফেসবুকে ।হঠাত্ একদিন ফেসবুকে "people you may know " তে একটা পরিচিত মুখ দেখলাম । চমকে উঠলাম । অনিমেষ দা !কৌভূহলবশত profile টা দেখলাম ।
সবচেয়ে বড় বিস্ময়টা তখনো আমার জন্য অপেক্ষা করছিল ।আমি সেদিন কেঁদেছিলাম । আমি এখনো জানিনা কেন সেদিন আনন্দে আমার চোখে পানি এসেছিল শুধুমাত্র তার ধর্মটা দেখে । হ্যাঁ, তার ধর্ম আর আমার ধর্ম আলাদা নয়।আমরা একই ধর্মের ।আর তার নামটাও আমি ভুল জেনেছিলাম ।
তার আসল নামটা নাহয় নাই বললাম ।তাকে তো আমি এখনো অনিমেষ দা নামেই ডাকি ।ঐ নামটাই তার থাক ।
আমার তখনকার অনুভূতি, পাগলামি আর স্বপ্ন দেখার গল্প বলে আপনাদের আর সময় নষ্ট করবো না । বরং এর পরের অংশটুকুই বলি ।
দাদার সাথে আমার পরিচয় হলো । স্বপ্নের মত ছিল দিনগুলো । আমি রোজ তার সাথে কথা বলতাম ।আমি তাকে যতটা আলাদা ভেবেছিলাম সে তার চেয়েও আলাদা ।অদ্ভুত মানুষ ।
বৃষ্টি তার খুব প্রিয় ছিল । বৃষ্টি হলেই তাকে ভিজতে হবে ।একদিন রাত সাড়ে বারোটায় ফোন দিয়ে শুনি সে বৃষ্টিতে ভিজছে । কথা শুনে রাগ দেখিয়েছিলাম খুব ।কিন্তু মনটা খুব ভালো হয়ে গিয়েছিল তার কথা শুনে ।
এই অদ্ভুত মানুষটাকে আমি ভালোবাসি ।সাময়িক মোহ নয় । যাকে অনুভব করি হৃদয় দিয়ে । প্রত্যেকটা মুহূর্তে যাকে আমি আমার পাশে কল্পনা করতে পারি ।
দাদার একটা বন্ধু ছিল । একটা মেয়ে । অনেকেই আমাকে এটা সেটা বলতো । বিশ্বাস করতাম না ।বন্ধুকে বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে সন্দেহ করার মন মানসিকতা আমার নেই ।
তার সেই বন্ধুটি একদিন আমায় ফোন দিল ।অবাক হয়েছিলাম ।সে আমায় দেখা করতে বললো ।
আমার কেন জানি খুব ভয় করছিলো যেতে । তবুও গিয়েছিলাম । আর তারপর ?
তারপর যা শুনলাম......, আমি চাই না ,সত্যিই চাই না আর কোনো মেয়েকে সেটা শুনতে হোক ।ফিরে আসার সময় সে আমায় প্রশ্ন করেছিলো "তুমি কি আর ওর সাথে যোগাযোগ করবা ?"
-"আমি ফোন করবো না ,কিন্তু সে ফোন করলে...."
-"নিশ্চিত থাকো ,ও ফোন করবে না । ও তোমাকে এড়াতে পারেনি বলেই আমার এখানে আসা । ওই আমাকে তোমার সাথে কথা বলতে বলেছে । "
মনে হচ্ছিল আমি ধূলোর সাথে মিশে যাচ্ছি । কোন কথা বলে ফিরে আসছিলাম । সে আমায় আবার ডাকলো,
-"নীলিমা,তাকেই ভালোবাস,যে তোমায় ভালোবাসে ।অরণ্যে রোদন করে কি লাভ ?"
কথা বেশি বাড়াবো না ।শুধু এতটুকু বলবো সে আর কখনো ফোন করেনি । আর কখনো যোগাযোগ হয়নি তার সাথে আমার ।
কলেজে এখন আর যাই না ।লোকে বলে,আমি নাকি পাগল হয়ে যাচ্ছি ।একা একা কাঁদি , একা একা হাসি । আর এখনো তার ফোনের জন্য অপেক্ষা করি ।তমা বলে ,কেন তুই অপেক্ষা করিস ? সে একবার তোকে ফিরিয়ে দিয়েছে । তাকে পেলেও সারাজীবন সে তোকে বারবার ফেরাবে ।
আমি অপেক্ষায় আছি । অপেক্ষায় থাকবো । সে ফিরে আসবে ।বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করে যাবো । সৃষ্টিকর্তা বলে একজন আছেন - আমি জানি আমি হারবো না ।তাইতো আমি আজো বৃষ্টি হলে ছুটে যাই । আমি জানি সেও ভিজছে । একসাথে নাহোক, এক আকাশের নিচে তো ভিজছি আমরা ।আর.....
আর অপেক্ষা করে আছি বছরের প্রথম বৃষ্টির । কেননা, সেই তো বলেছিল এই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যা চাইবো তাই পাবো ।
পৃথিবীর অন্য কোন মানুষ এই বৃষ্টিতে ভিজে কি চাইবে আমি জানি না । আমি শুধু জানি আমি কি চাইবো । আমাকে যে চাইতেই হবে ।এটাই যে আমার শেষ সুযোগ ।
(সংগৃহীত)এইতো আমি আবার শুরু করেছি । জানেন তো, আজকাল এমনটি আমার প্রায়ই হয় । আসল কথা ছেড়ে বাড়তি কথাই বেশি বলি ।
যাক সে কথা । আসল কথায় আসি । আমার নাম নীলিমা । আপাতত, আমায় এ নামে চিনলেই চলবে ।আর ওনার নাম অনিমেষ । আমার অনিমেষ দাদা।দাদার সাথে আমার পরিচয়টা হয়েছিল আজ থেকে ৫ মাস আগে ।একটা অনুষ্ঠানে । পুরো অনুষ্ঠানের পরিচালনায় ছিলেন উনি।সেদিন তার উপস্থাপনা দেখে এত ভালো লেগেছিলো ...।এত মানুষের ভিড়ে একজন মানুষ, যাকে সত্যিই সবার থেকে আলাদা করা যায়।ওনার নামটা তখনো জানতাম না ।খুব জানার চেষ্টা করছিলাম । তার সম্পর্কে আমার কৌতূহল দেখে আমার বন্ধুরা
বলল, কিরে LOVE AT FIRST SIGHT? ওদের কথা শুনে হেসে দিলাম । "আসলে ওসব কিছু না । Just কৌতূহল ।""
সেদিনই ওনার পরিচয় পেয়েছিলাম । পরিচয় বলতে শুধু নামটা । সেটাও একটু অন্যভাবে ।পুরো অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবার পর যখন বের হয়ে আসছিলাম তখন হঠাত্ দেখলাম সে বাইরে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে ।ঠিক এইসময়েই কেউ একজন তাকে অনিমেষ দা বলে ডাক দিল আর আমিও জেনে নিলাম তার নাম ।
"উনি তো হিন্দু " - তমা বলল ।
তাইতো মনে হচ্ছে ।
কেমন যেন একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম সেদিন । ওনার ধর্ম আর আমার ধর্ম আলাদা ! বিশ্বাস হচ্ছিল না ।আমার বন্ধুরা তারপর থেকে প্রায়ই ওনাকে নিয়ে আমার সাথে ফাজলামো করত ।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম আমরা । তাই রাস্তাঘাটে প্রায়ই দেখা হত ওনার সাথে ।ওনার কথাবার্তা, চলাফেরা , ওনার সবকিছুই ভালো লাগতো আমার ।সবচেয়ে ভাল লাগতো ওনার creativity টা । কলেজের সব অনুষ্ঠানে তার সক্রিয় উপস্থিতি দেখে আমি মুগ্ধ হতাম । আমিও একসময় মনে করতে আরম্ভ করলাম যে, really i am in love. কিন্তু আমি জানতাম যে এটা অসম্ভব । তাই এই ভাবনাটাকে কখনো প্রাধান্য দেইনি ।
তার সাথে অনেকবার এভাবে দেখা হলেও তার নামটা ছাড়া আর তেমন কিছু জানতে পারি নি
হয়তো সেভাবে কখনো জানার চেষ্টাও করিনি ।
তার সাথে আমার
দ্বিতীয়বারের মত পরিচয় হয় ফেসবুকে ।হঠাত্ একদিন ফেসবুকে "people you may know " তে একটা পরিচিত মুখ দেখলাম । চমকে উঠলাম । অনিমেষ দা !কৌভূহলবশত profile টা দেখলাম ।
সবচেয়ে বড় বিস্ময়টা তখনো আমার জন্য অপেক্ষা করছিল ।আমি সেদিন কেঁদেছিলাম । আমি এখনো জানিনা কেন সেদিন আনন্দে আমার চোখে পানি এসেছিল শুধুমাত্র তার ধর্মটা দেখে । হ্যাঁ, তার ধর্ম আর আমার ধর্ম আলাদা নয়।আমরা একই ধর্মের ।আর তার নামটাও আমি ভুল জেনেছিলাম ।
তার আসল নামটা নাহয় নাই বললাম ।তাকে তো আমি এখনো অনিমেষ দা নামেই ডাকি ।ঐ নামটাই তার থাক ।
আমার তখনকার অনুভূতি, পাগলামি আর স্বপ্ন দেখার গল্প বলে আপনাদের আর সময় নষ্ট করবো না । বরং এর পরের অংশটুকুই বলি ।
দাদার সাথে আমার পরিচয় হলো । স্বপ্নের মত ছিল দিনগুলো । আমি রোজ তার সাথে কথা বলতাম ।আমি তাকে যতটা আলাদা ভেবেছিলাম সে তার চেয়েও আলাদা ।অদ্ভুত মানুষ ।
বৃষ্টি তার খুব প্রিয় ছিল । বৃষ্টি হলেই তাকে ভিজতে হবে ।একদিন রাত সাড়ে বারোটায় ফোন দিয়ে শুনি সে বৃষ্টিতে ভিজছে । কথা শুনে রাগ দেখিয়েছিলাম খুব ।কিন্তু মনটা খুব ভালো হয়ে গিয়েছিল তার কথা শুনে ।
এই অদ্ভুত মানুষটাকে আমি ভালোবাসি ।সাময়িক মোহ নয় । যাকে অনুভব করি হৃদয় দিয়ে । প্রত্যেকটা মুহূর্তে যাকে আমি আমার পাশে কল্পনা করতে পারি ।
দাদার একটা বন্ধু ছিল । একটা মেয়ে । অনেকেই আমাকে এটা সেটা বলতো । বিশ্বাস করতাম না ।বন্ধুকে বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে সন্দেহ করার মন মানসিকতা আমার নেই ।
তার সেই বন্ধুটি একদিন আমায় ফোন দিল ।অবাক হয়েছিলাম ।সে আমায় দেখা করতে বললো ।
আমার কেন জানি খুব ভয় করছিলো যেতে । তবুও গিয়েছিলাম । আর তারপর ?
তারপর যা শুনলাম......, আমি চাই না ,সত্যিই চাই না আর কোনো মেয়েকে সেটা শুনতে হোক ।ফিরে আসার সময় সে আমায় প্রশ্ন করেছিলো "তুমি কি আর ওর সাথে যোগাযোগ করবা ?"
-"আমি ফোন করবো না ,কিন্তু সে ফোন করলে...."
-"নিশ্চিত থাকো ,ও ফোন করবে না । ও তোমাকে এড়াতে পারেনি বলেই আমার এখানে আসা । ওই আমাকে তোমার সাথে কথা বলতে বলেছে । "
মনে হচ্ছিল আমি ধূলোর সাথে মিশে যাচ্ছি । কোন কথা বলে ফিরে আসছিলাম । সে আমায় আবার ডাকলো,
-"নীলিমা,তাকেই ভালোবাস,যে তোমায় ভালোবাসে ।অরণ্যে রোদন করে কি লাভ ?"
কথা বেশি বাড়াবো না ।শুধু এতটুকু বলবো সে আর কখনো ফোন করেনি । আর কখনো যোগাযোগ হয়নি তার সাথে আমার ।
কলেজে এখন আর যাই না ।লোকে বলে,আমি নাকি পাগল হয়ে যাচ্ছি ।একা একা কাঁদি , একা একা হাসি । আর এখনো তার ফোনের জন্য অপেক্ষা করি ।তমা বলে ,কেন তুই অপেক্ষা করিস ? সে একবার তোকে ফিরিয়ে দিয়েছে । তাকে পেলেও সারাজীবন সে তোকে বারবার ফেরাবে ।
আমি অপেক্ষায় আছি । অপেক্ষায় থাকবো । সে ফিরে আসবে ।বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করে যাবো । সৃষ্টিকর্তা বলে একজন আছেন - আমি জানি আমি হারবো না ।তাইতো আমি আজো বৃষ্টি হলে ছুটে যাই । আমি জানি সেও ভিজছে । একসাথে নাহোক, এক আকাশের নিচে তো ভিজছি আমরা ।আর.....
আর অপেক্ষা করে আছি বছরের প্রথম বৃষ্টির । কেননা, সেই তো বলেছিল এই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যা চাইবো তাই পাবো ।
পৃথিবীর অন্য কোন মানুষ এই বৃষ্টিতে ভিজে কি চাইবে আমি জানি না । আমি শুধু জানি আমি কি চাইবো । আমাকে যে চাইতেই হবে ।এটাই যে আমার শেষ সুযোগ ।